অলংকরণ : প্রণবশ্রী হাজরা 




অ র্ঘ্য ক ম ল  পা ত্র

৫টি কবিতা 



সুখী-দম্পতি


জুতোর-ও এই জ্ঞান আছে

একা একা

তাদের কোনো অস্তিত্বই নেই


বাবা


যতই সম্ভাবনাময় হোক না কেন

একটি ক্যালেন্ডারের ভার

দেওয়ালকেই নিতে হয়


বিদ্যাসাগর


সাদা এবং শুভ্র। 

এই দুয়ের মধ্যে তফাত

বৈধব্যের


সিগারেট


পুড়তে পুড়তে পুড়তে...

সব ধোঁয়াই বেরিয়ে যায়


শুধু, পড়ে থাকে ঘুম


বিপ্লবী


একটাই দেশলাই।

ওটা জ্বেলে ফেলতে পারলেই


গোটা প্যাকেট জ্বলে উঠবে





নি র্জ ন  ন স্ক র

৪টি কবিতা



তোমার ঘরবাড়ি

             

যেন তার তারপিন ক্ষেতের পালক

চাঁদ কুটে জ্বেলে নেয় আলো 


এমন পাখির চৈত্র থেকে

খুঁটে খুঁটে একটি ফড়িং

সন্তানের ঠোঁটে শিস দেয়;


                     ঘামের শিস — 

                   যার কিছু প্রয়োজনে;  সাঁকো৷ দোলে 

অনেক নিচে বহে যাও তুমি

প্রবাহ; যেন পুরোনো শীতের দেশে


ভেড়াদের স্থির কিছু ঘাসুরিয়া বাড়ি



বোধিতলা          


কী এক শূন্যতা! 

মিথ, আওয়াজ করো৷ ডাকো 


যেন নিবেশ ভেঙে পৌঁছে দেখি 

পরে আছি অজস্র ধুলোর দুলে


যেখানেই থাকি সেই কি তথাগত! ধ্যানমগ্ন শূন্যতা!

তার দুহাত ভরে পিছুডাক 


আমি কি কাঁদতে ভুলে গ্যাছি 

থামাও আমাকে!

ওহে শূন্য, কেঁপে উঠছে অশ্রু!  থামাও



শোক


শোক, এই

পরিচর্যা হয়েছে কিছু


এই জুঁই এর হাওয়া

মালিটির দুঃস্থ নিয়ে ফিরে যায় 


আমার উবু হওয়া মেয়েটির পাশে

আহত নরম ধান, গড়িয়ে দিচ্ছে কাদের খোকা


তবে কি শুশ্রূষা হয়েছি কিছু! এবার

শোক এই পরিচর্যা হয়েছে বেশ 


দেখো কেমন ভেঙে যাচ্ছে আমারই ছায়া৷ যেন

একটি অলাত প্রসব; জন্ম দিচ্ছে -


সকল উপোষ৷ আর সমস্থ অপকর্ষ ভেঙে ভেঙে

দুলে উঠছে কাদের এত সমাবেশ!



অতল


আর কিছু নেই 

এই জল সুবোধ, মুখে তুলি 

তুলনামূলক তোমায় পেলাম৷ স্থির অথই 


বারবার কারা সাঁতার শেখার ভয়ে বিকাল নামায়

সন্ধ্যায় স্বীকার করা তাদের ঋণ, যেন 

তার চুলের কালো; এত আঘাতময়! ঝাপটা দিচ্ছে 


দেখো মূর্ছা যাচ্ছি 

পায়ে পড়ি ! ও জল বাঁচাও ; ডুবিয়ে মারো




সৌ র ভ  ব র্ধ ন

৬টি কবিতা



ক্ষত


বৃষ্টি হলেই গাছেরা মারা যায়

রাত গভীর হলে পাখি


যেমন ক্ষত তেমনই থাকে

মাঠ ওড়ে, ঘুড়ি জোনাকি


মহানভ অঙ্গন


এই যে মাঝে মাঝে 

মৃত্যুর গন্ধ 

মেখে যাই শ্মশান থেকে-


তা কি মৃত্যুর চেয়ে বড়ো নয়?


তা দিয়ে কি উড়ন্ত উট 

আকাশে টাঙানো যাবে না?



পাখা


এতো মৃত্যু 

কেন টাঙিয়ে রেখেছো মাটিতে?


আকাশে উড়তে দাও....


যৌনাঙ্গের ভিড় কমে যাক মেয়েটির কাছে।



গাছ


ভেতরের শক্তি আমাকে ডুবিয়ে নিচ্ছে 

আমাকে ঘুমিয়ে নিচ্ছে রোদের ভেতর


কাঁধের ওপর সংসার রেখে তুমি

পাহারা দিচ্ছো বাগান, বালিহাঁস 


গলার থেকে ছিঁটকে আসছে ঢেউ

আমি দূর থেকে শুনছি তোমার

বুকের ভেতর জন্ম নিচ্ছে গাছ



স্তন ও হৃৎপিণ্ড


চান করা স্তনের কাছে

উস্কখুস্কো নৌকায় চেপে দাঁড়ালে

মনে হয় আমার কাছে কোনো

শব্দ নেই।


চান না করা স্তনের কাছে

উস্কখুস্কো জাহাজ চেপে দাঁড়ালে

মনে হয় আমার কাছে কোনো

হৃৎপিণ্ড নেই।

                   

বেলাশেষে


অসীম এই আলোর কথা শোনো

এই যে পায়ের তলায় এতো অন্ধকার

লুকিয়ে রেখেছে আগুন, তার কোনো ছায়া নেই!

এই যে দৌড়ে যাচ্ছে নিঃসঙ্গ মানুষ

উৎসারিত আলোর দিকে - আমি কি একাই

মুখ তুলে থাকবো! এতো দীর্ঘ দীর্ঘ এই গাছ ধরে 

হাঁটতে হাঁটতে আমার সকল বেলা ফুরিয়ে যায়