শা র দ সং খ্যা
কবির কাছে অরুনিমা
সৌ ম্য ম য় পা ত্র
— আজকে আকাশ চুপ কেন!
কোথাও মেঘের মন ভেঙেছে?
এমন কেন ছড়িয়ে আছে, কাঁচের ওপর বয়স্ক মন!
এমন কেন, কোথাও যেন শব্দ হারায়
কোথাও যেন আমরা একা–আমরা একা?
— কই! মেঘ নেই তো!
আমার হাতে বৃষ্টি কোথায়
কোন আয়না ভিজছে জলে
কোথায় মুখ ঝাপসা হল!
কোন ঠিকানায় লিখছে চিঠি
হিসেব কোথায়? বলো, হিসেব কোথায়?
— কি যে বলো, মেঘেরা কোথায় হিসেব লেখে!
সবাই কেমন পাখির মতো বৃষ্টি কুড়ায় বন্ধ ঘরে একলা করে মুহূর্তকে। কে পড়বে হিসেব লেখা! সবার কেমন বৃষ্টিতে মন, সবাই কেমন ছন্নছাড়া।
মেঘ কখনো চায়নি ফেরত বৃষ্টি রঙের দিনগুলো।
— তাই বুঝি ?
— হ্যাঁ। তবে লেকের জলে অন্ধকার, কত কথা চুপ যেন।
বয়স্ক পুরুষের সাধ টেবিলের ওপর ধুলোজমা বইয়ের মতো
পুরানো পাতায় পাতায় অচেনা দাঁত, নখ, অথবা হারিয়ে যাওয়া
বাজের ঠোঁটে আমাদের বয়স,
ঝুলে থাকা শাখাপ্রশাখা থেকে খসে যাচ্ছে বয়ঃক্রমের পোশাক, অন্তর্মুখি ইচ্ছেরা।
আমাদের জমে থাকা কথার ওপর যেভাবে সন্ধ্যের ছায়া পড়ে। প্রেমিক থেকে পুরুষ, পুরুষ থেকে প্রেমিক; এখানে জামার বদল। আমরা অন্য কেউ। ঠোঁটে, বুকে নেমে আসি, যেন লতা।
— এসব কথা বুঝছিনা। থাক। কেমন যেন অন্যকিছু, অন্যরকম।
— সন্ধে এমন শরীর ঘেঁষা। দিন-আড়ালের অপেক্ষারা অন্যচোখে বুকের ওপর, ঘাড়ের কাছে।
— সন্ধে কেন খামখেয়ালী!
হঠাৎ যেন অন্য কেউ, অন্য কোনো পৃষ্ঠাতে মন! অন্য আলো শরীর জুড়ে। প্রেমের থেকে অন্য প্রেমে জামার বদল মেঘের মতো বৃষ্টি শেষে অন্য কোথাও; পাতার ওপর জল যেটুকু রইলো পড়ে।
— অরু! তুমি কেমন প্রেমিক চাও?
— আমি কোনো প্রেমিক চাইনা। প্রেমিক নরম মাংস খসিয়ে কঙ্কাল হয়ে ওঠে। রাতের তেতো জল। জল ঘরময়, শরীর ও শরীরে.........
কেবল চল্লিশ অথবা সাতষট্টিতে পথ পেরোনোর দুটো হাত থাক।
— প্রেমিক কেবলই জল। নদীর স্নান অথবা বৃষ্টিতে। সময়ের কাছে বরফে বাষ্পে পুরুষ। প্রেমিক আসলে জল।
— ওসব থাক, অন্য কথা বলো
— প্রিয় সময়?
— কেমন যেন সন্ধ্যে ভিজি এখন করে! অনেকটা পথ .... সময় থেকে সময় হয়ে অনেকটা পথ
— সন্ধে আসলে ফেরার নাম। রোদভাঙা দিন গুছিয়ে নিয়ে শহর থেকে শহর জুড়ে প্রেমের জন্য অপেক্ষাতে। প্রেমের জন্য... প্রেমের জন্য। কবির চোখে বনলতা, কবির লেখা রক্ত ধুয়ে কজল হল– সন্ধ্যে এলে।
— তুমি কবির মতো
অথবা অবুঝ স্বপ্নের মতো লাল নীল।
নয়তো একজন তীক্ষ্ম ফলার মতো অভিনেতা বা প্রতারক
— কেন ?
— একই হাত একই চোখ, সময় পেরিয়ে অন্যকেউ। অন্য কোনো জন্ম থেকে বৃষ্টি হলে শরীর ছুঁয়ে
যেন নদীর গভীরে নদী, জানালার ভেতরে জানালা , দরজার পর দরজা, মানুষ আরেক মানুষ।
— প্রেমিক আসলে কবি নয়। কবির দেওয়ালে মিথ্যে। মিথ্যের নাম স্বপ্ন। কবি আসলে ফেরিওয়ালা অথবা ব্যবসায়ী।
তুমি কাকে চাও?
— আজ পৃষ্ঠারা ভিজে যাক। তুমি জল হও কবি!