কবিতার  কথা 
অলংকরণ : শুভদীপ মন্ডল



অ নু প ম  মু খো পা ধ্যা য়

কুসুমনগরী


কুসুমনগরী ঘিরে সারা জীবনের মতো বুঁদ হয়ে আছি

ঠোঁট পেতে বসে আছি কখন যে নেমে আসে তোমার অধর


যেন ১ অপরাধী জল্লাদের ভুল হলে বেঁচে যেতে পারে


আর নয় আর নয় আজ সেই দিন চলো বেরিয়ে তো পড়ি


হলুদ নদীর দিকে হেঁটে যাই চলো


জীবনের জাদুঘরে পাথর অনেক

কিছু তার শিলালিপি কিছু হাতিয়ার



অ নু প  ঘো ষা ল

জেল থেকে লেখা চিঠি


থেমে থাকা এ শহরের বারান্দায়

                       এখন রঙবেরঙের ফুল।


ওয়ার্ডেন ওঁর কোয়ার্টারে ফুটে থাকা    

দোপাটি আর ঝুমকো জবার কথা বলছিল।

বলছিল উপচে পড়া

                            আইভিলতার কথাও।


সবটাই রথের মেলা থেকে কেনা নয়। 

  সবটাই মুচমুচে নয় আইনসভার মতো।


একটা ক্যাকটাসও কিনেছিল ওঁরা।

                খুব ঘন, শক্ত কাঁটার শরীর।


রুক্ষ গভীর থেকে

              তুলে আনতে হয় রোদ্দুরের সুর।  

   গঞ্জাম,বেগুসরাই অথবা...হয়ত এখানেও।


নরম মাটি,বর্ষায় ভেজা শরীর

                 আলতো দুপুরের গন্ধে তাতেও  

                         অবাক করা ফুল ধরেছে।

টকটকে তাজা রঙের ফুল।


সংখ্যায় দোপাটি, আমরা-ওঁরা অথবা   

           বিশুদ্ধ ভেড়ার পালের থেকে কম।

দেবতারা বাতিল করেছে বহুদিন

                          কুটকুটে রোগ হবে বলে।


অথচ, ওয়ার্ডেন জানে

        ফুল ফুটলেও ক্যাকটাসকে প্রতিদিন

                      কাঁটা জাগিয়ে রাখতেই হয়।


টাঙিয়ে রাখতে হয় ফিরে আসার গান।


শিমুল ফোটার আগে।

                 নিবে যাওয়ার আগেও। 

                 একবগ্গা নদীটার মতো।


 

গো লা ম  র সু ল

ব্যাবিলনের জাহাজ


যেখানে  আমি জন্মেছিলাম সেখানে ব্যাবিলনের জাহাজের ঘন্টার শব্দ হয়


সূর্য ডুবছে জাহাজের বাগানে একটি ইদারার ভেতরে


আকাশের জোয়ারে নক্ষত্রের আলো গুলো দেখছিলাম

তারা আকাশের উপকূলে এসেছিলো

শিকারের নৈঃশব্দ্যের মতো


নদীগুলোর সঙ্গে আমিও আমার পা  খুলে দিলাম অন্য একটি বন্দরের জন্য


দূরের স্পন্দিত শূন্যতা

আমি মাইলের পর মাইল চলে গেছি আমার মনের ভেতরে

আমার ত্বকের ওপর নিস্পৃহ ক্ষতগুলো যা নাকি আধুনিক কয়েকটি শ্রেষ্ঠ শহর


চোখে আঁকা চাঁদ

ক্লান্ত বাতির  পাশে শুয়ে প্রাচীন ভিক্ষুক সমাজ 


পাখনার রাত্রি উড়ছে

এখনো সেই বাগানের ভেতর



র বি ন  ব ণি ক

উজ্জ্বল জল 


তুমি কি অবাক পুষেছ কখনো 


জাগিয়ে সুগন্ধ তুলে দিই হাতে

চোখে রেখে দিই স্তন ফিরে আসা উজ্জ্বল জল


তুমি কি আদর করেছ জন্ম

হাত টেনে গ্রহে তুলে নেওয়া শরীর 

গুল্মের মতো লোমশ 


এসব বোঝনি বলেই 

শব্দকোষে পাতা উল্টিয়ে গেছ বিস্ময় এতকাল 



র বী ন  ব সু

কাপালিক দিন ‌


ভালোবাসা বড় এক অদ্ভুত অসুখের নাম

টন-টন ব্যথা বুক

দীর্ঘশ্বাস ঘিরে ধরে রাখে

অকথিত ওষ্ঠের চুপ

বিরহ আঁচলে বাঁধা অভিসার অভিমান দেখে


এত যে বিড়ম্বিত প্রেম, ম্যাজিক উদ্ভাস

তার কাছে নতজানু মানবী হৃদয়

আকণ্ঠ আলাপ নিয়ে ভ্রমণের শেষে


ছুঁয়ে ছুঁয়ে রেখে যায় স্খলিত স্মৃতির পনরুদ্ধার...



লি পি  সে ন গু প্ত

মগ্ন চৈতন্য


দর্শনের পলি ঘেঁটে  

নতুন কৌশল

আবিষ্কার বেড়েছে দূরবীনে


মধ্যাহ্নেই আকাশের চোখে

সূর্যোদয়ের গোপন প্রেম দেখব—


এক বুক জল,

এক আকাশ ফুল

ভিতরে আগুন


অতীতরহস্যের সূত্র ধরে

নদীতীরে বালি খুঁড়বে মগ্ন চেতনার ঢেউ


দেখলাম কিছু কাজ আড়াল পছন্দ করে

যখন রাত্রি নামল।



অলংকরণ : প্রত্যুষ বাগ


ব ন মা লী  ন ন্দী

ভালবাসা


রোদ পথে কর্পূর

বাতাসেই ডানা মেলে আগুনের নাভিমূল

ফুলের কন্ঠের মত আকাশ

কোকিলের  কুহু কুহু বাজনা রোদের মিউজিয়াম

হাওয়া হারমোনিয়াম বাজিয়ে পার হয় পথ

রামধনু নোটবুক লিখে সময়ের চাবুক

বিদ্যুৎ ক্ষত থেকে যায় অশ্রুর ধানমাঠে

লিখি এক নদী তৃষ্ণা

নিখাদ দুঃখ ফেলে যায় নদীতীর

আমার পড়ার টেবিলে 

জোনাকি পূর্ণিমা

অন্ধকার স্বর্গ

মেঘলা উপন্যাস

 সিদ্ধ আগুনে পুড়ে হৃদয়

প্রেমে ব্যথা অনুভব আঘাত মনখারাপ আছে বলেই আয়ুই একমাত্র অমৃত

গীতা

পুরাণ

বেদ

কোরান

বাইবেল

সব ই ভালবাসার অনুবাদ

বয়সের ও‌ থাকে মানচিত

কাঁটাতারের স্বদেশ

এই ভাবেই শরীর হয়ে ওঠে একটি মন্দির



সৌ মী  আ চা র্য্য

খেলা


রাত্রি গভীর হলে চাঁদ নামে বুকের উপর

নোনাজলে ধুয়ে মুছে সেজে ওঠে বেদী

ঘুঙুরে মুছে যায় কত শত রাতের শোক

অভ্যাস গতিতে অলৌকিক ছন্দ জাগে না আর

মুখ মুছে ফেলে যায় এঁটোকাঠা উঠোন

অকারণ সাজিয়ে বসি আজন্ম ইচ্ছের ভোগ