মুক্তগদ্য 

অলংকরণ : অমিতাভ ঘোষ 


ল ক্ষ্মী কা ন্ত  ম ণ্ড ল

স্ক্যানার  : পরম প্রভা 


পিচ রাস্তায় মায়াপ্রহর খুঁজে বেড়াচ্ছে দুরন্ত বাইক ; তারই তীক্ষ্ণ আলোয় যাবতীয় নীরব দংশনের হিংসা- ঘৃণা- রিরংসা ভরা উত্থান- পতন । কত সুনাম- দুর্নাম । মহানিমের শাখা থেকে বাতাসে দুলতে থাকে সবুজলতার আকর্ষ ; চাই আরও অবলম্বন , চাই আরও অধিকার । মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকের মতো স্ট্রিট লাইট জ্বলে ওঠে , ছড়িয়ে যায় সমস্ত কোলাহলের উপর বনসাই পারফিউম ; মেঘ গলনের আতর । 

এই হল অমোঘ বিশিষ্টতা । একটি গ্রহ আর তার ঘুর্ণন শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় হাইড্রোজেন নিয়ে আরও আরও অজানা জগতের মায়ায় সময়সরণি পেরিয়ে যায় । 


কতকগুলো পূর্ণচ্ছেদ , কতকগুলো কমা ভেঙে ঢুকে পড়ি উজ্বল পরায় । আনন্দপাতার উপর হাতখানি ধরতে সময় আছে কি তোমার ? কিংবা আমি কতখানি ভ্রষ্ট হয়েছি আমার  জিহ্বার আড়ষ্টতায় ?  


ঘুরপাক খাই । কারন হিসেবে বলতে গেলে বলতে হয় - ন্যারেটিভ চাদরে ঢাকা নিজেদের জানা , নিজেকে দেখতে সক্ষম হচ্ছি কেটে ফেলা নিজেরই এক রক্তাক্ত অংশে । বেলা অবেলার নিকানো উঠোনে ঘরটা কেমন অন্যঘর , বহুল প্রচলিত ঝিঙেফুলের রঙে দীর্ঘ ছায়া । একথা কী তুমি ভাবতে পেরেছিলে সুব্রত ? 


সাদা শিকড়ের সাথে মাটির ফাটলে প্রবেশ করতে চায় হৃদয়ের খোলা টান । নদীর সাথে তার তুলনা চলে না । নদী ভালোবাসি বললেই কত আহ্লাদ গড়িয়ে আসে । সেই কোলাজগুলি অবিমৃষ্য কোনো রসায়ন ; অথবা সুন্দরের আবাহন। এপার ওপারের স্রোতে ভাসতে থাকে বিপন্ন সাপ। 


চোখবুজে বসে আছি আমি ও তাপস ।

ঠিক তেমনিই - যেমন ভাবে আমার ক্লাসে দুষ্টুমি সামলাতে না পারলে বলি- ধ্যান কর । চোখ বন্ধ করে নাকের ডগার দিকে তাকা , তারপর ধীরে ধীরে কপালের দিকে দেখ বন্ধ চোখে ;  আর ভাবতে থাক সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যাকে তার কথা ; তার মুখ । তারা সময় নষ্ট না করে তা-ই করতে শুরু করে দেয় ৷ তারপর নিঃশব্দ সারা ক্লাস । কিছুক্ষণ পরে দেখা যায় কারও কারও চোখে জল। কারও ঘনঘন নিশ্বাস ।  


তুমি কি বলতে পার ভাস্বতী , নিঃশব্দের অর্থ কী ?  


কোন দূরবীন যন্ত্র কাজ করে না আর । শুধু এই চোখের কনীনিকায়  অসংখ্য তারার ভীড় - তার মাঝে কয়েকটা মাত্র লাল তারা । বুঝতেই পারিনা কোনটা আর্দ্রা , কোনটা জ্যেষ্ঠা ?  

দিকচক্রবালের শেষ দেখায় যখন অন্ধকার থাকে না , দিন প্রভাত হয় না - রাত্রিও আসে না , সৎ থাকে না - অসৎও থাকে না : তখন সবই শুধুই প্রতিধ্বনি । বারবার ফিরে আসে 'অতল’ শব্দটির কাছে । এই অতলই শুদ্ধ  ; অতলই  অক্ষয় এবং অতলই সূর্য । যা সবিতা অপেক্ষা আরো মহিমাময় । তার উচ্চতার দিকে তাকিয়ে ঘাড় ব্যথা করে - দেখতে পারলে দেখা যায় পৃথিবীর মুখে বসন্তের দাগ। 


সাঁকোগুলো ভেঙে যাচ্ছে সব । নিয়মমত পারাপার বন্ধ নেই। সাঁতার কাটতে কাটতে আমি আপনি খেলছি মাদারিকা । সারা গায়ে আঁশকাদা । মেঘে আচ্ছন্ন দিগন্ত । সমস্ত স্বীকার- অস্বীকার মোহের চক্রব্যূহে নষ্টস্মৃতির ডোঙা বেয়ে যায় । 


মেঘ নামছে উত্তমের উপর । রাস্তার উপর পাথর ফেলার তিরতির কাঁপন মাখছে মনিমালা - ভূগোল  না-ভূগোলের কোনো চিঠি নেই যোজন যোজন অভিলাষে - 

পশ্চিমদিক কি হারিয়ে গেল আবার ! অথবা পূর্ব ! 


সূর্যের পরম প্রভার মান বের করতে আর কত গোধূলি ধারণ করতে হবে আমাদের ?