অনুবাদ  কবিতা 

অলংকরণ : শুভদীপ মন্ডল



মূল ওড়িআ কবিতা  :  মমতা দাশ

তরজমা : প্র দী প  কু মা র  রা য়

  



প্রত্যাহার


এবার সরিয়ে নাও

ধীরে ধীরে, খুবই ধীরে

নির্বোধ অবোধ ছায়া আঁধারের ভেতরে

এখন আমি,

উঠে আসা চাঁদকে বলছি

দেখ, আমি নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছি এইবার।



আমি মাটির রক্ত বিন্দুকে ধরেছি হাতের পাতায়

আমি আলাদা করে চিনেছি

বৃষ্টি র ফোঁটাকে, শিশির বিন্দু র নম্র আগ্রহকে

সমুদ্রের লবণত্বকে, নদীর পাঁকের গন্ধকে,

পদ্মের প্রস্ফুটন কে, নিরুপায় ক্লান্ত ভাগ্যকে।


আমি নড়িয়ে দিয়েছি আকাশ বাতাস চরাচর

আমার আবেগ আন্দোলনে,

নিত্য আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরেছি

আমার ভালোবাসাকে।

লুকিয়ে হত্যা করেছি কিছু হাহাকার আর হতাশাকে।


আমি ধূলোয় মুখ ড়ুবিয়ে দিয়েছি কবে

পাল্টে গিয়ছি ভিক্ষের থালা।

মাথা উঁচু করে চিৎকার করেছি

কেউ আছো ?

আছো যদি জ্বলন্ত প্রশ্নগুলোকে ধারণ করো

প্রত্যুত্তর দাও।


আমি আমার কোল কে পূর্ণ করেছি

শূন্য করেছি  অন্তরকে।

মনকে ভেঙে টুকরো টুকরো করেছি আমি

আত্মায় মেখেছি কবে কলঙ্ক।

এখন কিন্তু দাগ  নেই কোথায়ও।


উপড়ে পড়া গাছের ফুল পাতা শুকিয়ে গেছে প্রায়

আমার ক্যালেণ্ড়রের থেকে মুছে গেছে দিনাঙ্ক।


এমনকি আমার আদরের গড়া

শ্বেত পাথরে গড়া নতুন ঘর

রাতে ফুলের গয়নায় শ্বেত পর্দার নিচে

শুভ্র  শাড়ি পরা হাঁসি হাঁসি আমার

অনেক চেহেরা

সবকিছু থেকে সরিয়ে নেবো নিজেকে।


বাকি যা রইলো

চেয়ে দেখেছি।

কি বাকি রইলো ?

এক চলমান দেহকে

তিন অক্ষরের এই নামটি কে

আর সরিয়ে নেওয়া যায়না যে

নিজে নিজে সেইসব দূর দূরতর

কেউ কার ছিলো কখনো

সত্যি ত

কে কার....?




ପ୍ରତ୍ୟାହାର


ଏଥର  ଓହରାଇ ନିଏ ,

ଧରେ ଧୀରେ ଅତି ଧୀରେ

ନିର୍ଜନ ଅବୋଧ ଛାଇ ଅନ୍ଧାର ଭିତରେ,

ଏଇନା ମୁଁ'

ଉଇଁ ଆସୁଥିବା ଚନ୍ଦ୍ରକୁ କହୁଛି,

ଦେଖ୍ ,ମୁଁ  ନିଜକୁ ଓହରାଇ ନେଉଚି ଏଥରକ।


ମୁଁ ମାଟିର ରକ୍ତ ବିନ୍ଦୁକୁ ଧରିଚି ପାପୁଲିରେ,

ମୁଁ ଅଲଗା କରି ଚିହ୍ନିଚି

ବର୍ଷା ଟୋପାକୁ,କାକର ବୁନ୍ଦାର ନମ୍ର ଆଗ୍ରହକୁ

ସମୁଦ୍ରର ଲବଣତ୍ଵକୁ,ନଦୀର ପଙ୍କବାସ୍ନାକୁ

ପଦ୍ମର ପ୍ରସ୍ଫୁଟନ କୁ,ନିରୁପାୟ କ୍ଲାନ୍ତ ଭାଗ୍ୟକୁ।


ମୁଁ ଚହଲାଇ ଦେଇଚି ଆକାଶ ପବନ ଚରାଚର

ମୋ ଆବେଗ ଆନ୍ଦୋଳନରେ,

ନିତ୍ୟ ଆଲିଙ୍ଗନରେ ଆବୋରି ଧରିଛି

ମୋ ଭଲପାଇବାକୁ।

ଲୁଚି ଛପି ହତ୍ୟା କରିଚି କିଛି ହାହାକାର ଓ ହତାଶା କୁ।


ମୁଁ ଧୂଳି ରେ ମୁହଁ ମାଡି ଦେଇଛି କେବେ

ପାଲଟିଛି ଭିକ୍ଷା ଥାଳ।

ମୁଣ୍ଡ ଉପରକୁ ଉଠାଇ ଚିତ୍କାର କରିଚି

କେହି ଅଛ?

ଅଛ ଯଦି ଜ୍ୱଳନ୍ତ ପ୍ରଶ୍ନମାନଙ୍କୁ ଧାରଣ କର,

ଦିଅ ପ୍ରତ୍ୟୁତ୍ତର।


ମୁଁ ମୋ କୋଳକୁ ପୂର୍ଣ୍ଣ କରିଚି

ଶୂନ୍ୟ କରିଚି ଅନ୍ତରକୁ।

ମନକୁ ଭାଙ୍ଗି ଖଣ୍ଡ ଖଣ୍ଡ କରିଛି ମୁଁ

ଆତ୍ମାରେ ବୋଳିଛି କେବେ କଳଙ୍କ।

ଏବେ କିନ୍ତୁ ଦାଗଟିଏ ନାହିଁ କେଉଁଠି,

ଉପୁଡି ପଡିଥିବା ଗଛରୁ ଫୁଲ ପତ୍ର ଶୁଖିଗଲାଣି ପ୍ରାୟ

ମୋର କ୍ୟାଲେଣ୍ଡରରୁ ଲିଭିଗଲାଣି ଦିନାଙ୍କ।


ଏପରିକି ମୁଁ ଅତି ଆଦରରେ ଗଢିଥିବା 

ଶ୍ୱେତ ପଥର ଗଢ଼ା ମୋ ନୂଆ ଘର

ରାତି ଫୁଲଙ୍କ ଗହଣାରେ ଶ୍ୱେତ ପରଦା ତଳେ

ଶୁଭ୍ର ଶାଢ଼ୀ ପିନ୍ଧା ହସହସ ମୋର

ଅନେକ ଚେହେରା,

ସବୁଥିରୁ ଓହରାଇ ନେବି ନିଜକୁ।


ବାକି ଯାହା ରହିଲା, 

ଚାହିଁ ଦେଖୁଚି।

କଣ ବାକି ରହିଲା?

ଏକ ଚଳମାନ ଦେହକୁ, ତିନି ଅକ୍ଷର ବିଶିଷ୍ଟ ଏଇ ନାଆଁ କୁ

ଆଉ ଓହରାଇ ହୁଏନା ତ।

ଛାଏଁ ଛାଏଁ ସେସବୁ ଦୂର ଦୂରତର,

କିଏ କାହାର ବି ଥିଲା  କେତେବେଳେ

 ସତେ ତ ,କିଏ କାହାର ?




মমতা দাশ (জন্ম: ৪ঠা অক্টোবর, ১৯৪৪)  উড়িয়া কাব্য জগতের এক  পরিচিত নাম। এযাবৎ প্রকাশিত তাঁর ৯টি কাব্য সঙ্কলন বিপুল পাঠকীয় স্বীকৃতি লাভ করেছে। তাঁর কবিতা মুখ্যতঃ এক সচেতন, সম্বেদনশীল মানুষের আত্ম- অন্বেষণের অভিব্যক্তি। তাঁর কবিতার অন্তস্বর গভীর, গম্ভীর আবার কখনো এক রহস্যময় প্রেমিক সত্তার সাথে মিলন , বিচ্ছেদ, মান অভিমানের মধুর রসে রসাণিত। নিয়তি পীড়িত, দুঃখ যন্ত্রণাগ্রস্থ এই জীবন কে ভোগ করে, সহ্য করে যাকে অতিক্রম করার প্রক্রিয়ায়  কবি মমতা দাশ সৃষ্টি করেছেন এক উজ্জ্বল কাব্যালোক। 'একত্র চন্দ্র সূর্য্য' কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯৮৭ সালে সাহিত্য একাডেমী পুরস্কারে ভূষিত হন।

প্রকাশিত কবিতা সংকলন :- ১. নৈমিষারণ্য  ২. একত্র চন্দ্র সূর্য্য  ৩. অবাক্ স্বর্গ  ৪. উজ্বল উপবন  ৫.নীল নির্বিপন  ৬. হিরণ্যবর্ণা ৭. শুভ্র ধারা  ৮. রাগ ললিত  ৯. মায়ান্ধকার।