ক বি তা
![]() |
অলংকরণ : শুভদীপ মন্ডল |
অ র্ঘ্য ক ম ল পা ত্র
অপেক্ষা
শীতকাল চলে এল। এবং শীতকাল চলে যাবে। আমাদের বিছানা ছেড়ে লেপকম্বল চলে যাবে আলমারিতে। আমাদের কোনো সুপর্ণা নেই। শেষরাতে ক্যামন চোখ মুছেছি কম্বলে, সেইসব দিন মনে পড়বে। আর আমার সারা শরীর জুড়ে নেমে আসবে শীত...
অ ত নু ভ ট্টা চা র্য
তখন
তুমি বললে- শ্রম-চোরের মন
আটকে থাকে, চঙ্ক্রমনে বাঁধা-
মারছে ওরা মাথায়, হাতে, ভাতে
দিকে দিকে যে অজস্র সংঘাত
রাষ্ট্র আর জনগণের মাঝে
জেগে উঠছে নিভে যাচ্ছে কত
আমি বলছি, সে তো সত্য, ঠিক
আরো প্রশ্ন কত প্রশ্ন আছে-
-জীবন শুধু অধিকারটা নয়
বলেছি যেই- দৃষ্টি-শলাকায়
বিঁধে দিচ্ছো, শুনলে না সে কথা
বললে শুধু- সময় নষ্ট, গৌন
ভাবনা রাশি দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়!
গো লা ম র সু ল
মেঘ বৃষ্টি ঝরিয়ে কি গান গায় আমাকে ঘিরে
যে জলধারা বয়ে যায় সন্ধ্যায় তাই দিয়ে আমি লিখি
জলের সাগর
উত্তাল হয়েছে ডাঙা
আমি সেই দ্বীপ
ভেসে যাই চাঁদের মতো
সংগীতের সুরের মতো মেঘ বৃষ্টি ঝরিয়ে কি গান গায় আমাকে ঘিরে
যদি ওই বৃষ্টির ফোঁটা মাটি থেকে হাত বাড়িয়ে আমাকে ডেকে নিত
মাটির ভেতরে আপন করে রেখে দিত আমার হৃদয়
জলময় ঝিঁঝিঁ পোকা
জোনাকির আলো
শেষ হারা কত নির্ঝর
কিভাবে পেতে সেই একটুখানি বুক
যার ওপর দাঁড়িয়ে ওই বিশাল আকাশ
জ্যো তি র্ম য় মু খো পা ধ্যা য়
মুখ
আমার স্মৃতি কিছুটা জটিল, মানে বাঁকা
যা কিছু মনে আসে এবং মনে রাখি, সোজাপথে নয়
নাম মনে করতে গেলে দেখি ভুলে গেছি
অথচ মুখ দিব্বি মনে আছে
মায় আদলের ভেতর টুকরো টুকরো আলাদা
আলাদাভাবে মনে করতে পারি অনায়াসে
এমনকি কোনদিন দেখিনি এমন মুখ'ও
দেখলে মনে হয় চেনা, দেখেছি কোথাও
খুব ভালোভাবে লক্ষ করে দেখেছি
মানুষের মুখ কিছু নির্দিষ্ট খন্ডের জোড়াতালি মাত্র
কোলাজের মতো এটা ওটা নিয়ে
প্রকৃতি এঁকে চলেছে কিছু মূর্তি
আমরা আসলে একটা বিরাট মুখের অংশমাত্র
তা প স রা য়
যে আমাকে আশ্রয় দেবে আমি তার জন্মগ্রহণ টের পেতে চাই
হয়ে উঠব জোয়ারের মতো, নতুন পাখির শিস
কলকাতা গোল্লায় গেলে আমি তাকে
নতুন গ্রামখানি এনে উপহার দিতে পারি , আর
সুবর্ণরেখার চরে ডিঙি নৌকোখানি রেখে
যেসব চাঁদের গায়ে কলঙ্ক লেগে আছে খুব, তাদের ডেকে ডেকে
প্রসাধন দেব, নাও মুছে নাও,
কোনো ব্যথা রাখতে যেও না
হ্যাঁ হ্যাঁ হয়ে উঠব ভাঙা মন্দিরের টেরাকোটা থেকে জীবনচরিত
বেণে বঊ প্রতীক্ষায় আছে, সপ্তডিঙা এসেছে বন্দরে
ঘরে তুলে নিতে হবে স্বর্ণ কলস
আঁচল বিছিয়ে আছে, সদাগর ঘাটে ঘাটে সংগৃহিত
কত গল্প তুলে দেবে তাকে, সহস্র রজনী দেবে
ঘুমে হারপুন লেগেছিল যদি আজ তার নিরাময় হবে
দেখ সাইকেলের ঘন্টিতে বেঁধে আমার শ্রাবণ স্বর
তোমাকে শোনাতে চেয়ে
এই আমি আবার এসেছি, এই আমি একটি বটের চারা পেতে রেখে
বসে থাকব --- তোমরা দু’জনে কতদিনে বড় হয়ে ওঠো
ব ন মা লী ন ন্দী
ভাল থেকো ভালবাসা
আকাশ আনলায় জামাদের গ্ৰাম
পথ হাটে অনন্তকাল
ফেলে যায়
হৃদয়ের পটভূমি
আত্মার মানচিত্র
রঙ সূতোর স্বদেশ
এ বাংলা কোকিল
দোয়েলের দেশ
কলমি শাক সর্ষের ক্ষেত
রাম রহিমের পদ্মার পানি
জামার হাতে
কাস্তে হাল লাঙ্গল
আর পুথিপত্তর
জন্মভূমি ধানমাঠ
খুব মনে পড়ে
পায়রা ওড়া ওড়ি মুখগুলি
সংসার সম্পর্ক অশ্রুর ক্যানভাস
মনখারাপ পেন্টিং গুলি
আর
তুমি ভালবাস
সযত্নে রেখে যায়
প্রেমের বাঁধানো ফটোফ্রেমে
![]() |
অলংকরণ : শুভদীপ মন্ডল |
বি শ্ব জি ৎ দে ব
ঘুঘু
ঘুঘু থেকে উঠোনের দিকে নেমে যাচ্ছে
একটি দুপুর..যেখানে রোদের ঢালু
অবতরনিকা, পাঁচিলের গানের ফাটল
এসব দৃশ্য থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছে
শ্রাবনের জল, ঝুরোবালি, পুরোনো গাঁয়ের
আওয়াজ, নড়বড়ে ছায়ার ফটক
ঘুঘুদের আর কোন গল্প নেই
বয়নশিল্প নেই, দুপুরের ধূসর উপমা খুঁজে
তারা নেমে আসছে বৈদ্যুতিন পৃথিবীর টানে
র বি ন ব ণি ক
আমার চৈত্রমাস
ঘেন্নার জলে ভাসাও
আমার চতুর্থ ছাই
ভাসাও, যেভাবে বিরক্তি ভাসে
মুখমন্ডল জানালায়
পেখমের মত দীর্ঘ বিচ্ছেদ
দৈর্ঘ্যের মত ভাসাও
কলমের ছদ্মবেশে এসো অগ্নি
পোড়াও, ক্ষুদ্র মানুষের মত পোড়াও
হে মানব– প্রকাশ্য যুদ্ধের মত শরীর
নিহিত উৎসে এখনো করোনি স্নান
বৃক্ষ, অনুকম্পার মত বাড়িয়ে রেখেছে ডাল
নিহত মাটির পায়ে রাখ পরাজয়
এসো অগ্নি– উড়ন্ত লালের হাওয়ায় ডোবাও
আমার চৈত্রমাস
স ত্তা প্রি য় ব র্ম ন
চিৎকার
আর চুপ করে থাকা উচিৎ নয়
শব্দ করি,
গলা পর্যন্ত আটকে আছে ঘোলা জল।
প্রতিদিন জমা হয় শক্ত বাতাস
এবার
রাস্তায় নেমে চিৎকার করলে
কিছু লোক জমা হবে নিশ্চয়ই,
মাথার ওপর মাথা দাঁড়াবে ওপর মহল পর্যন্ত
তারপর গুলি আসবে, হিংস্র থাবা উঠে বসবে মাথায়।
চুপচাপ একাকী মৃতদেহ গুম হওয়ার চেয়ে
চিৎকার করে মরে যাওয়া অধিক লাভজনক,
প্রতিটি চিৎকারের তীর ছুটে যায় পাহাড়ি ঢালের দিকে
সারি সারি সিম্ফোনিতে ধ্বনিত হয় বিজয়ের উল্লাস
চিৎকারে রাগাশ্রয়ী সুর ওঠে
প্রতিধ্বনির মত,
রাজপথের আকাশে ঝারবাতি জ্বলে
চিৎকার বদলে যায় জলসাঘরের মহরায়।
সৌ ম্য ম য় পা ত্র
শূন্যতা
এই যে যাবে বলে একটা আকাশ রেখে গেলে
আমি ধরতে পারিনা,
না মাথা ঝুঁকিয়ে বলেছে ভালোবাসি।
এই বর্ষারদিন, মেঘ, পায়ে ডিঙিয়ে যাওয়া জমাজল
কই আর! তোমার হাতের মতো ভেজা শ্বাস!
আসলে বিচ্ছেদ পরবর্তী শূন্যতার নাম'ই আকাশ
কবিতারা মৃত তারাদের দূঃখ, অবসাদ
তোমাকে বলতে চাওয়ার নাম বৃষ্টি; ছাদজুড়ে।
পাঁচটা নদীর স্নানে নোনা মন,
এ আকাশ তার চেয়েও কম নয়
যেটুকু তুমি দ্যাখো, তার চেয়েও বেশি নাম এ'রাতে
এ'হাতে অনেক সমুদ্র নামে-নোনা স্বাদ, ক্ষয়
তারারাও আমাদের হৃদয়ের অনেক অতীত
শূন্যতা রেখে একদিন এ আকাশ ছেড়ে দিতে হয়।