মুক্তগদ্য 


অলংকরণ : শুভদীপ মন্ডল


সু স্মি তা  বো স 

অন্যরকম


মি একটা নিপাট পরিচয়পত্র তৈরি করেছি যেখানে কোনো বড় অক্ষরের দখলদারি নেই, আছে শুধু ধূ ধূ নিরক্ষর ছোট ছোট শব্দের চিৎকার। হাসপাতালের নাড়ি কাটার কোনো প্রমাণ আমি ঝোলায় রাখি না, কোনো নাম করা কবি-সাহিত্যিকের পেন আমার বুকপকেটে নেই, প্রেমের উল্টো বয়ান পুড়িয়ে ফেলেছি বহু যুগ আগেই। একটা প্রতিবন্ধী ছেলের গুনগুন করে গাওয়ার চেষ্টায় গাঁয়ের কালো পায়ের নূপুরের হাসি মিশে আছে,দোয়াতে শুকিয়ে আসে আষাঢ়ের নদী। ডিগ্রির পাকা চুল কিংবা ২৭ এর স্বাবলম্বী পাঞ্জাবিটা আমার ছেঁড়া জুতোর মর্ম বোঝেনি, সত্বার সাথে সামাজিক পরিচিতির শত্রুতা বরাবরের। 

নখের ডগায় জমা সেরেলাকের হিসাবের কাছে অনায়াসে বোকা বনে যায় কফি হাউসের টেবিল চাপড়ানো সেই যৌবন। আমার স্নায়বিক স্থিতি ফেরানোর ওষুধগুলো বাজারের বেগুন-আলুর দাম কষে শেষ ট্রেনে ফিরে আসে ঘরে।শাখা সিঁদুরের অভিমান নিয়ে দরজায় খিল দেওয়া দুটো নরম হাতের কাঠগড়ায় প্রতিদিন দাঁড়ায় কাগজের সেরা খবরের নিজস্ব সংবাদদাতা। আত্মিক গর্ব ফিকে হয়ে যায় দায়িত্বের শ্যাওলা পাঁচিলে।

হলুদ ট্যাক্সির শহরে জেব্রা ক্রসিং এর উপর শ'খানেক কবিতা লিখলেও কয়েদীর স্বরলিপি আমাকে শিখতে হয়নি। টাকার গন্ধে ট্রামে চেপে সকাল ছোটে দপ্তরে, হিসেবনিকেশ চুকিয়ে সমুদ্র ঠেলে জনতার ক্ষোভ রাজধানী ছাপিয়ে গেলেও ফুটবলের শিকার বাঙালির অলস সন্ধ্যে।কাঁটাতারে গোলাপ পোষার শখ পিঠের বাত সেঁকে নেয় চায়ের একাকি উষ্ণ কাপে।মধ্যবিত্তের বিলে বিত্ত কম থাকে ঠিকই তবে স্পর্ধার জিভ বেজায় বিষাক্ত।