আফ্রোমার্কিন কবি আমিরি বারাকা-র দুটি কবিতা
অনুবাদ: মলয় রায়চৌধুরী
কুড়ি খণ্ডে লেখা আত্মহত্যার চিরকুটের ভূমিকা
ইদানিং, আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি যেভাবে
মাটি ফেটে যায় আর আমাকে গিলে ফ্যালে
যখনই আমি কুকুরটাকে বেড়াতে নিয়ে যাই।
কিংবা নাটুকে ব্যবসার ফালতু সঙ্গীত
বাতাস তৈরি করে যখনই আমি বাস ধরতে দৌড়োই....
ব্যাপারটা তেমনই দাঁড়িয়েছে।
আর এখন, প্রতিরাতে আমি নক্ষত্র গুনি।
আর প্রতি রাতে আমি একই সংখ্যা পাই।
আর যখন তারা গোনবার জন্য আসবে না
আমি তাদের ফেলে যাওয়া গর্তগুলো গুনি।
কেউ আর গান গায় না।
আর তারপর গতরাতে আমি পা টিপে টিপে
আমার মেয়ের ঘরের কাছে গিয়ে ওর গলার আওয়াজ পেলুম
কারোর সঙ্গে কথা বলছে, আর যখন দরোজা খুললুম
তখন কেউই সেখানে ছিল না
কেবল ও হাঁটু গেড়ে, উঁকি মারছে
নিজের জোড়-করা হাতে
ঘটনা
ও ফিরে এলো আর গুলি চালাল। ও ওকে গুলি মারল। ও যখন ফিরে
এলো, গুলি চালাল, আর ও পড়ে গেল, হুমড়ি খেয়ে, চলে গেল
ছায়া-জঙ্গল পেরিয়ে, গুলি চালাল, মরছে, মরে গেল, সব শেষ।
তলার দিকে, রক্ত বেরোচ্ছে, গুলি খেয়ে মৃত। ও তখন মারা গেল, সেখানে
পড়ে যাবার পরে, ঘুরন্ত বুলেট, ফর্দাফাই করে দিল ওর মুখ
আর রক্ত হত্যাকারীর ওপর আর ধূসর আলোয় ঝর্ণার মতন ছিটিয়ে পড়ল।
মৃত লোকটার ছবি, সব জায়গায়। আর তার আত্মা
আলোকে শুষে নিচ্ছে। কিন্তু ও মরে গেলো অন্ধকারে ওর আত্মার চেয়েও
অন্ধকারে আর সবকিছুই অন্ধের মতন হুমড়ি খেয়ে পড়ল ও যখন মরছে
নক্ষত্রদের নীচে।
আমাদের কিছু বলার নেই
হত্যাকারীর সম্পর্কে, শুধু এই যে ও ফিরে এলো, কোথাও থেকে
যা করেছে তা করার জন্য। আর কেবল একবার গুলি চালাল ওর শিকারের
চাউনির দিকে, আর রক্ত বেরোতে আরম্ভ করতেই দ্রুত কেটে পড়ল। আমরা জানি
হত্যাকারী ছিল বেশ পটু, দ্রুত, আর মৌন, আর ওর বলি-দেয়া লোকটা
বোধহয় ওকে চিনতো। তাছাড়া, মৃত লোকটার জমাট রক্তের
অপ্রীতিকর মুখের ভাব, আর ওর হাতের ও আঙুলের শীতল
হতভম্বভাব ছাড়া, আমরা আর কিছুই জানি না।
'এবং খোঁজ',
শারদ সংখ্যা (আশ্বিন)
অঙ্কনশিল্পী: তমোজিৎ ভট্টাচার্য্য, শুভদীপ মন্ডল