কবিতা 





সু কা ন্ত  দা স

ছাই


ছাই দেখা শেষ। আমের ডাল ফেলে জেহাদ দেগে চলছেন ঠাকুরদা। গরম ভাতের মতো হাতা নাড়তেই ভীড় উপচে পড়ে। নদীর কথা ছিল নাইবার। পকেটে পাথরকুচি ভরিয়ে তোলে ঢেউ। ছাতা বেঁধে দিই।
স্নান করে ফিরবার সময়েও দেখেছিলাম ঠাকুরদা গ‍্যাঁট হয়ে বসে রয়েছেন।




সে মি মা  হা কি ম
ছেলে ভোলানোর গান


ঐখানেই বসেন মহিলাটি
(নাকি বলব মেয়েমানুষটি)-
ভিখিরি।
দেখতে:
ওরা যেমন দেখতে হয় তেমনিই আরকী!
হাত পাতে অভ্যাসে।
অবরে সবরে ঝিমোয়, 
ঘষঘষিয়ে গা চুলকায় পা আঁচড়ায়।
একটা রুগ্ন শিশু কোলে কিংবা পাশে 
ঘুমিয়ে থাকে সবসময়,
কোনদিন খেলতে দেখেনি কেউ,
থাকে না সে জেগেও
নিদেন দেখা যায় না কাঁদতেও!
খবরে প্রকাশ 
অমন বাচ্ছা ভাড়া পাওয়া যায়-
খুব অল্প খরচে।

ভিক্ষের খাতায় সস্তা সুড়সুড়ি-
মুনাফা বাড়ে ব্যবসায়!
আফিমের নেশায় চুপ দুপক্ষই
শিশু এবং তুমি আমি সে। সবাই।

ঘুমাক
ঘুমাক
যেমন বুলবুলিতে ধান খেয়ে যায়। বর্গী আসে দেশে।
ঘুমাক 
ঘুমাক
যেমন ঘুমায় নাগরিক ব্যস্ততা- জেব্রা ক্রশিংয়ে...




সূ র্য কা ন্ত  জা না (সাগ্নিক)
দিক দর্শন
                 

তার বুকের নৈঋত্ কোনে মাথা রেখে বলেছিলাম মাধ‍্যাকর্ষন বল হারিও না। 
ও মা! 
জ্বলন্ত উল্কা পিন্ডের লোভ এড়াতে পারলো না।
ফলত কখন যে পড়ে গেছি সুবিন্যস্ত বালিয়াড়ির উপর
মরু বৃশ্চিকের স্বপ্ন স্পর্শে 
নীল হয়ে যাওয়া শরীর।
ক‍্যাকটাস চিবোতে চিবোতে
খুঁজি জলতল,
কুঁজ ভরে ওঠে।
তাতে পটাশিয়াম পারমাঙ্গানেট মিশিয়েও শুদ্ধ করা যায় না।
ঈশান কোনে মেঘ ধরলে
মনে পড়ে যায় নৈঋত্ বুক।
বাকি নয় দিক খুব ঝাপসা ।




তৈ মু র  খা ন
মহামূর্খ


নিজেকে মহামূর্খ ভাবিলাম 
কোনও আন্দোলনেই সামিল হইলাম না 
কোনও দলেই নাম লেখাইলাম না 
অন্ধকারেই রহিয়া গেলাম 
আমার ব্যক্তিত্ব ফুটিল না 

পৃথিবীতে কত হাওয়া উঠিল 
কত ধার্মিক হাওয়ায় ভাসিল 
কত বিজ্ঞানী হাওয়ায় উড়িল 
আমি মাটির ঘরে চাটাই পাতিয়া 
মায়ের একখানা তেলচিটা বালিশে ঘুমাইলাম 
ঈশ্বর লইয়া ভাবিলাম না 
দেশ লইয়া ভাবিলাম না 
মানুষের কথা কী করিয়া বলিতে হয় 
জানিলাম না 

আমার ঘরে বৃষ্টি পড়িল 
বিদ্যুৎ চমকাইল 
রাজনীতির লোকেরা আসিয়া হম্বিতম্বি করিল 
আমি কিছুই বলিলাম না 

একাকী নদীতীরে আসিয়া নদীকে ডাকিলাম 
মৃত মাকে ডাকিলাম 
নতুন চপ্পল জোড়া খুলিয়া রাখিয়া 
বাবাকে চেঁচাইয়া বলিলাম : 
দ্যাখো, আমার কত উন্নতি হইয়াছে !


★ অঙ্কন : শুভ